মো: রুবেল : বহু প্রতীক্ষিত ঢাকা-চট্টগ্রাম চারলেন মহাসড়কে ফেনীর ফতেহপুরে রেলওয়ে ওভারপাসটি খুলে দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করার পর ওভারপাসটি খুলে দেওয়া হয় বলে জানান ফেনীর জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজ্জামান।
ঈদের আগেই ওভারসাপটি চালু হওয়ায় ঈদযাত্রা স্বস্তির হবে বলে আশা করছেন এই মহাসড়কে চলাচলকারী চালক ও যাত্রীরা।
প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা জানান, ওভারপাসটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১২ সালে। ২০১৪ সালে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ২০১৬ সালের অক্টোবরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স শিপু পিবিএল’ প্রকল্পের মাত্র ৪৫ শতাংশ কাজ শেষ করে। তিনদফা সময় বাড়ানোর পরও কাজ শেষ করতে না পারায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি বাতিল করে সরকার। দীর্ঘ ১৫ মাস বন্ধ থাকার পর গত বছরের (২০১৭) ডিসেম্বরে প্রকল্পের বাকি অংশের কাজ সম্পন্ন করার জন্য দায়িত্ব পায় সেনাবাহিনী।
আমিন কনস্ট্রাকশনের প্রকল্প প্রধান (সদ্য সাবেক) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান, সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন বিগ্রেডের ২০ ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়নের সহযোগিতায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফতেহপুর রেলওয়ে ওভারপাসটির কাজ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আল আমিন কনস্ট্রাকশন। “শুরুতে প্রকল্প ব্যায় ৬০ কোটি ৫১ লাখ ১৮ হাজার টাকা থাকলেও পরে তা বেড়ে ১০৫ কোটি ৭ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়। ওভারপাসটির দৈর্ঘ্য ৮৬ দশমিক ৭৯ মিটার, অ্যাপ্রোচ রোডের দৈর্ঘ্য ৭৫৫ মিটার। এর মধ্যে ঢাকার দিকে ৩৪৭ মিটার, চট্টগ্রামের দিকে ৪০৮ মিটার, সর্বমোট গার্ডার ৩০টি, পিলার ৮টি এবং পাইল ৪৯০টি।”
যাত্রীবাহী বাস স্টার লাইন পরিবহনের পরিচালক মাইন উদ্দিন জানান, চলতি বছরের জানুয়ারিতে মহিপালে সিক্সলেন ফ্লাইওভার চালু হওয়ায় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা অভিমুখী ৬ লেনের গাড়িগুলো ফতেহপুর গিয়ে এক লেন হয়ে যায়। অপরদিকে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের ফোরলেনের গাড়িগুলো একই সাথে গিয়ে একলেন হয়ে যায়। এতে রেলপথের দুপাশের সড়কে অন্তত ৫ কিলোমিটার করে ১০ কিলোমিটার নিত্য যানজটে পড়তে হয়।
গেল রমজান মাসে এক পর্যায়ে এ যানজট প্রায় ৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে যায়। ফতেহপুর ওভারপাসের রাজধানী ঢাকামুখী একটি লেন গত ১৫ মে ও অপর আরেকটি লেন গত ২০ মে খুলে দেয় নির্মাণ কাজে দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনী।
ফেনী ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই প্রশাসন) মীর গোলাম ফারুক বলেন, ঈদের আগে ওভারপাটি চালু হওয়ায় ফেনী অংশে যানজট একেবারেরই থাকবে না। তবুও ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্ন রাখতে মহাসড়কে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি জেলা পুলিশের একাধিক দল কাজ করবে।
জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজ্জামান জানান, চারলেনের এ ওভারপাস উদ্বোধনের ফলে বাণিজ্যিক শহর চট্টগ্রামের সঙ্গে সারাদেশের যোগাযোগ সহজতর হবে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে দেশ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে।