বৃহস্পতিবার বিকাল সোয়া ৪টার দিকে মোল্লা আলিফুজ্জামান, নজরুল ইসলাম ও পিয়াস রায়ের মরদেহবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখান থেকেই স্বজনদের কফিন বুঝিয়ে দেন বিমানমন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান কামাল।গত ১২ মার্চ ইউএস- বাংলা এয়ারলাইন্সের বিএস২১১ ফ্লাইটটি ৭১ জন আরোহী নিয়ে কাঠমান্ডু বিমানবন্দরে অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয়। বিমানে থাকা ৩৬ বাংলাদেশির মধ্যে ২৬ জন মারা যান।গত সোমবার ২৩ জনের লাশ দেশে এনে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। পরিচয় শনাক্ত করতে দেরি হওয়ায় বাকি তিনজনের লাশ বৃহস্পতিবার এল।বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ শাখার ব্যবস্থাপক তাসমিম আক্তার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ৪টা ১০ মিনিটে কাঠমান্ডু থেকে আসা ফ্লাইটটি ঢাকায় অবতরণ করে। নিহতদের স্বজনদেরকে বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেইট দিয়ে ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পরই একে একে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে বেরিয়ে আসেন নজরুল ইসলাম, আলিফুজ্জামান ও পিয়াস রায়ের স্বজনরা।নজরুল ইসলাম, মোল্লা আলিফুজ্জামান ও পিয়াস রায়
নজরুল ইসলাম চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিল্প ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, পিয়াস রায় গোপালগঞ্জ শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের শেষ বর্ষের ছাত্র এবং আলিফুজ্জামান ঠিকাদারির পাশাপাশি খুলনা বিএল কলেজে মাস্টার্স করছিলেন।বিকাল ৫টা ৩০ মিনিটের মধ্যে সব লাশ হস্তান্তর প্রক্রিয়া শেষ হয়। এ সময় বিমানবন্দরে উপস্থিত বিমানমন্ত্রী শাহজাহান কামালকে চোখের পানি মুছতে দেখা যায়।পরে বিমানমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “আমি অত্যন্ত শোকাহত। গোটা জাতি আজকে শোকাহত। এত বড় দুর্ঘটনা অতীতে হয়েছে কি না, জানি না। “২০ তারিখে ২৩ জন লাশ গ্রহণ করেছিলাম। আজকে তিনটি লাশ গ্রহণ করলাম। এদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।”দুর্ঘটনার তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, “ঘটনার পরের দিনই নেপাল গিয়ে সেই দেশের প্রধানমন্ত্রীর, সামরিক বাহিনীর প্রধান, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি। এত বড় দুর্ঘটনার জন্য তাদের এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষ দায়ী, সেটা তাদের বলে এসেছি। তারা জানিয়েছেন, ব্ল্যাক বক্সের তথ্য বিশ্লেষণ শেষে ঘটনার তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।”ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ শাখার মহাব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম বলেন, তারা নিজ খরচে লাশগুলো স্বজনদের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। বাকি আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাদের দাফন সম্পন্ন হবে।এদিকে মাগরিবের নামাজের পর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে আলিফুজ্জমানের একটি জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বলে তার বন্ধু স্বজনরা জানিয়েছেন। আলিফ আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পিয়াসও ছিলেন শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের নেতা।